• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

হাওরের পাকা ধান নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষক, শ্রমিক সংকট

  • ''
  • প্রকাশিত ১৮ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জের হাওরে হাওরে পাকা ও আধপাকা ধান ঢেউ তুলছে। সুন্দর এই দৃশ্য মনে দোলা দিলেও জলাবদ্ধতা আর পাহাড়ি ঢলের শঙ্কা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে হাওরের কৃষকদের। মঙ্গলবার রাতে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টিতে দিরাই উপজেলার কালিয়াকুটা হাওরের পূর্ব অংশে প্রায় ২০০ হেক্টর বোরো জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কাইমা, মধুপুর, বেগমপুর, আনোয়ারপুর, গচিয়া ও খেজাউড়া গ্রামের সহস্রাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জলাবদ্ধতা আর শিলাবৃষ্টির শঙ্কার মধ্যে আগেভাগেই জেলার বিভিন্ন হাওরে ধান কাটছেন কৃষক। তবে হাওরের বেশির ভাগ জমির ফসল কাঁচা অবস্থায় থাকায় বিপাকে তারা। অন্যদিকে জলাবদ্ধতা, পাহাড়ি ঢল, বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টির কারণে হাওরে পর্যাপ্ত ধানকাটা শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। বিগত সময়ে বাইরের জেলা থেকে অস্থায়ীভাবে বিপুলসংখ্যক খেতমজুর এলেও এবার তার বিপরীত। কম্বাইন হার্ভেস্টর ও ধানকাটার আধুনিক মেশিন প্রচলনে সনাতন পদ্ধতিতে ধান কাটায় মুনাফা কম পাওয়া শ্রমিকদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। ফলে ধান কাটার মৌসুমে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে হাওরের পাকা ধান দ্রুত কাটতে ভর্তুকিমূল্যে জেলার ১২ উপজেলার সাড়ে ৮০০ কম্বাইন হার্ভেস্টর মেশিন কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তবে হার্ভেস্টর মেশিন হাওরের উঁচু এলাকার ধান কাটতে সহায়ক হলেও তুলনামূলক নিচু উর্বর জমির ধান কাটতে না-পারায় বিপাকে কৃষক। তাই সনাতন পদ্ধতিতে ধান কাটতে শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে কৃষকদের। পর্যাপ্ত শ্রমিক না পাওয়ায় হাওরের ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা।

শান্তিগঞ্জ উপজেলায় খাই হাওরের কৃষক সিজাউল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর সিলেটের কানাইঘাট এলাকা থেকে ধানকাটা শ্রমিক আসেন। এবারও ১০ জন শ্রমিক আসার কথা ছিল। গতকাল ফোন দিয়ে তারা আসবে না বলে জানিয়েছেন। এখন হাওরের ধান কাটা নিয়ে চিন্তায় আছি। কীভাবে এত ধান কাটব।

সদর উপজেলার কৃষক রহমত মিয়া বলেন, হার্ভেস্টর মেশিন পানিতে বা নরম জমিতে ধান কাটতে পারে না। তাই নিচু এলাকায় জমির ধান কাটার জন্য শ্রমিকের ওপর নির্ভর করতে হয়। এখন আগের মতো শ্রমিক পাওয়া যায় না। আকাশের অবস্থাও ভালো না। কবে কী হয়, বলা যায় না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০ হাজার শ্রমিক সুনামগঞ্জে ধান কাটতে এসেছেন। জেলায় ২ লাখ শ্রমিক রয়েছে। তাছাড়া অস্থায়ী ভিত্তিতে আরও ৩০ হাজার অনিয়মিত শ্রমিক ধান কাটার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।

একই তথ্য জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, এবার হাওরে শ্রমিক সংকট দেখা দেবে না। বুধবার পর্যন্ত জেলায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির ফসল কাটা হয়েছে। প্রতিদিন ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল কাটা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads